হোম কোয়ারেন্টাইনঃ ১টি অক্ষম প্রতিরোধ
ডঃ এম এ শাহানুল ইসলাম, তিয়ানজিন, চীন থেকেঃ ঘটনা
সাধারণ। সংযম ও ধৈর্য ধারণে আমাদের কুখ্যাতি রয়েছে। যেখানে ৩১২ জন শিক্ষার্থী ও গবেষক
নিঃশব্দে হাজী ক্যাম্পে কোয়ারেনটাইন থাকতে পারেন সেখানে ১৪২ জন রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের
উচ্চবাচ্চ্যের কথা শোনা যাচ্ছে ইতালি হতে ফেরার পর হতেই। সরকারী নিয়ম মেনে তাদেরকে
কোয়ারেনটাইনে রাখতেই যতশত বিপত্তি বাঁধছে। তাই এরপর হতে বিদেশ ফেরত কাউকে যদি হোম কোয়ারেন্টাইনে
থাকতে বলা হয় তাহলে সে কতটা সংযম ও নিয়ম মেনে চলবেন তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকে। তাই বিদেশ হতে আগত, বিশেষ করে বহুল করোনাক্রান্ত
দেশ হতে ফেরত প্রবাসীকে কোয়ারেনটাইনে থাকার নিয়মগত বাধ্যতাকে স্বাগত জানাতেই হয়। কারণ
দেশে ফেরার পর একজন প্রবাসীর যে সকল প্রবণতা বেশি থাকে তা হলোঃ
১.
প্রিয় মানুষটির সাথে দেখা করা
২.
পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠতা
৩.
আত্বীয়-স্বজনদের সাথে বহুদিন পর মনখুলে গল্প করা
৪.
স্মৃতি বিজড়িত দেশের মাঠ ঘাট বাজারে ঘুরে বেড়ানো
৫.
প্রিয় খাবারের খোঁজে রেস্টুরেন্টে হানা দেয়া
আর
এই সকল আবেগ হতে একজন বাঙালী কতটা নিজেকে ১-২ দিন নয়, ১৪ টা দিন সামলে রাখবেন তার কল্পনা
করাটাও কষ্টকর। তাছাড়া হোম কোয়ারেন্টাইনে যেসকল নিয়ম মেনে চলতে হয় যেমনঃ
১.
আলাদা ঘর, আলাদা বিছানা, চাদর, বালিশ
২.
আলাদা গোসলখানা ও পায়খানা
৩.
আলাদা থালা, বাটি, গ্লাস, চামচ
৪.
পলিথিনের/রাবারের হাতমোজা পরিহিত অবস্থায় খাবার পরিবেশন
৫.
তার ব্যবহৃত প্রতিটি গৃহস্থালি দ্রব্য পানিতে ভালভাবে ফুটানো
৬.
তাকে সবসময় গরম পানি পান করতে দেয়া
ইত্যাদি নিয়ম ১৪টা দিন ধরে প্রশিক্ষণহীন এই জাতির জন্য মেনে চলা যে কতটা কষ্টকর তার হিসেব করতে বড় বুদ্ধিজীবী হবার প্রয়োজন নেই। তাই হোম কোয়ারেনটাইন বা সেল্ফ কোয়ারেনটাইন নামক গালভরা অন্ঃসারহীন শব্দগুলিকে ত্যাজ্য করে সরকারী নিয়ম মেনে সরকারী নজরদারীতে থাকতে হবে সরকারের নির্ধারিত জায়গাতে। তবেই না নিজের, নিজের পরিবারের এবং দেশের কল্যাণ।
তবে সরকারেরও উচিত হবে যথেষ্ট সদিচ্ছার সহিত কোয়ারেনটাইন স্থানের নুন্যতম মান নিশ্চিত করা।
লেখক
তিয়ানজিন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
তিয়ানজিন, চীন
BCYSA.ORG
এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ
অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর
ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল :
[email protected]।